নমস্কার। আজ আমরা এই পোস্টির দ্বারা ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর বাণী ও উপদেশ সম্পর্কে জানবো। সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন ছিলেন ভারতের একজন মহান পন্ডিতগ, শিক্ষক, দার্শনিক ও সমাজ সংস্কারক। তিনি মনে করতেন – “শিক্ষকদের দ্বারাই দেশের ভবিষ্যৎ ভিত্তি মজবুত হতে পারে।” ১৯৬২ সালে তিনি রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন শুরু করেন সেই বছর তার কিছু পূর্ব ছাত্রছাত্রী ৫ই সেপ্টেম্বর তার জন্মদিন পালনের জন্য উনাকে অনুরোধ করেন থাকেন তিনি বলনে যে – “আমরা জন্মদিন পালন না করে এই দিনটিকে যদি শিক্ষকদের উদেশে “জাতীয় শিক্ষক দিবস ” হিসাবে পালন করা হয় তাহলে আমি বেশি সম্মানিত বোধ করবো। সেই থেকেই ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর জন্মদিন ৫ই সেপ্টেম্বর কে ১৯৬২ সাল থেকে ভারতে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয়ে চলেছে।
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন তার বাণী ও উক্তির মধ্যে শিক্ষা, মানুষত্ত্ব, আচরণ , শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে তার চিন্তাভাবনা ব্যক্ত করেছেন। নিম্নে ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর বাণী ও উক্তি (Sarvepalli Radhakrishnan Quotes Bangla) বিস্তারিত আলোচনা করা হল। আপনি তার বাণী ও উক্তি কপি করে “শিক্ষক দিবস ” এর উপলক্ষ্যে সোশ্যাল সাইট অথবা হোয়াটস্যাপ স্ট্যাটাস হিসেবে শেয়ার করতে পারেন।
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর বাণী – Sarvepalli Radhakrishnan Quotes in Bengali
“বইয়ের তাৎপর্য হলো আমাদের
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন
সংস্কৃতির মধ্যে সেতু নির্মাণ করা!”

“কলেজে ঢোকা এখন আরো সহজ হয়েছে
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন
আর কঠিন হয়েছে শিক্ষিত হওয়া”

“জীবনের আনন্দ এবং সুখ শুধুমাত্র জ্ঞান
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর বাণী
ও বিজ্ঞানের ভিত্তিতে সম্ভব।”

সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর বাণী – Sarvepalli Radhakrishnan Bangla Quotes
পুস্তকই হলো সভ্যতার বাহন।
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর বাণী
“মনের শান্তি আর বুদ্ধিমত্তা না এলে,
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন
বাহিরের ব্যবস্থা কোন সহায়তা করে না।”
“জ্ঞান ও বিদ্যার ফল হল অনুভব!”
ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর বাণী
আমাদের দেশের বেকারত্বের একটি অন্যতম কারণ
হলো কৃষিকাজে ও শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞানকে প্রয়োগ না করা ।

“একজন পরামর্শদাতা শিক্ষক একজন ব্যক্তিকে
সম্ভব্য ভবিষ্যৎ দেখাতে ক্ষমতায়ন করেন
যখন আমরা মনে কর আমরা সব
জানি তখনই আমাদের শিখতে হবে
“আদর্শ শিক্ষক তারাই যারা শিক্ষাথীদের চিন্তা করতে শেখায়!’
আমাদের উচিত আঞ্চলিক সংস্কৃতির সৌন্দর্য রক্ষা করা।
কেননা এই আঞ্চলিক সংস্কৃতির মধ্যে
আমাদের বেঁচে থাকার রসদ রক্ষিত আছে।

ধন সম্পদ ব্যক্তিকে পরিপূর্ণতা দেয় না।
আত্মিক উন্নতির মাধ্যমে ব্যক্তি
পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে।
“শ্রেষ্ঠ বই এবং শ্রেষ্ঠ মানুষের সান্নিধ্যে থেকে যে
জীবন অতিবাহিত হয় সেই জীবনই উৎকৃষ্ট জীবন।”
[আরো পড়ুন – শিক্ষামূলক উক্তি]
শিক্ষা সম্পর্কে ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন বাণী ও উক্তি
“এমন শিক্ষার প্রয়োজন যা জগতের মানুষের কল্যাণ সাধনে সক্ষম।
আমরা এমন শিক্ষা চাই যার সাহায্যে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সামাজিক
এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করতে সক্ষম হয়।”1

গ্রন্থাগারগুলি বহু চিন্তাবিদ, দার্শনিক ও
লেখকদের প্রতিনিয়ত চাহিদা পূরণ করছে।
অন্তরের সমস্ত আবিলতা দূর করার জন্য চাই শিক্ষা।
শিক্ষা হবে আত্মীক উন্নতির সহায়ক।
আধ্যাত্মিক শিক্ষা বহির্মুখী ও অন্তর্মুখী মনকে সংহত করে।
ভালো পুস্তক আমাদের কোনো নীতির অনুবর্তী হতে সাহায্য করে ।
Sarvepalli Radhakrishnan Thoughts in Bengali
কোনো মানুষ স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারে না যদি না
তার মধ্যে যুক্তিবাদ ও আধ্যাত্মিক বোধ জাগ্রত না হয়।1

অর্থ সব নয়। অর্থের দ্বারা উৎকৃষ্টকে পাওয়া যায় না।
আমাদের সব চাইতে কাম্য সম্পদ মন ও হৃদয়ের প্রশান্তি।
আর সহৃদয়তা টাকায় বিকোয় না ।
“সহনশীলতা হলো শ্রদ্ধা যা সীমিত মন
অসীমতায় পৌঁছানোর জন্য প্রয়োজন!
কেবল নিখুঁত মনের মানুষেরাই জীবনে আধ্যাত্মিকতার
অর্থ বুঝতে পারেন। নিজের সত্যতা, আধ্যাত্মিক একনিষ্ঠতা পরিচয়
মানুষের স্বভাব মূলত ভালো এবং আত্মজ্ঞানের
প্রচেষ্ট সমস্ত খরাপকে দূরে ঠেলে দেবে।
“মানুষের ভালো করা, মানুষকে সত্যিকারের মানুষ করে তোলা,
আমাদের সকলের কর্তব্য। আর তা যদি আমরা করতে চাই,
সেটি কেবলমাত্র প্রেমের মাধ্যমে, ভালোবাসার মাধ্যমেই করতে পারি”।
“আমরা যে মানব জীবন পেয়েছি, তা হলো
আদর্শ মানব জীবন গড়ে তোলার উপকরণ।”
“মানুষ তারা; যাদের মন টানে সৌন্দর্য,
প্রেম এবং সংস্কৃতির মতো মানবিক মূল্যবোধে।”
শিক্ষক সম্পর্কে ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন বাণী ও উপদেশ
“একজন শিক্ষকের কর্তব্য হবে শিক্ষার্থীদের একটি গণতান্ত্রিক
দেশের উপযুক্ত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা।”

“শিক্ষকরা শিক্ষকতাকে যেন বৃত্তি হিসাবে গ্রহন না করেন।
বরং তারা একে আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করবেন।”

“সত্যিকারের শিক্ষক তারাই যারা
আমাদের ভাবতে সাহায্য করেন।”

শিক্ষকদের আচরণ হবে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অনুকরণ – যোগ্য।
শিক্ষকরা যদি সঠিক পথ দেখায় তবে শিক্ষার্থীরাও সেই পথে চলতে শিখবে।
শিক্ষকদের দেখতে হবে শিক্ষার্থীরা যেন সৎ চরিত্রের অধিকারী হয়।
সদাচার, সদ ব্যবহার শিক্ষার্থীদের অন্যতম প্রধান অনুশীলনের বিষয় ।
“শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞান বিতরনই শিক্ষকদের একমাত্র
কাজ নয় বিভিন্ন কল্যাণকর কাজেও তাদের উৎসাহিত করতে হবে।”

Teachers Day Quotes By Sarvepalli Radhakrishnan in Bengali
“শিক্ষার অর্থ এই নয় যে বিভিন্ন বিষয়ে কিছু তথ্য আত্মস্থ করা।
শিক্ষা হবে চরিত্র গঠনের সহায়ক।”

ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন এর বাণী ও উক্তি
শিক্ষকদের মনীষা সভ্যতার বিবর্তনে চালিকা
শক্তিরূপে কাজ করেছে। শিক্ষকরাই সভ্যতার
প্রদীপ শিখা অনির্বাপিত রেখেছে।
“শিক্ষকরা সমাজে একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে।
ইতিহাস পাঠ করলে জানা যায় সভ্যতার ক্রম বিবর্তন
শিক্ষকদের হাত ধরেই হয়েছে। তা প্রাচ্য কিংবা পাশ্চাত্য
বিশ্বের যে অংশেই হোক না কেন।”
যদি মুক্ত সমাজ নির্মাণ করতে হয়,
তবে শিক্ষার্থীদের মনকে কলুষ মুক্ত করতে হবে।
শিক্ষকদের কর্মশক্তি প্রকাশ করার স্বাধীনতাই হবে আদর্শ।
আমরা যদি সুখে শান্তিতে থাকি, আর আমাদের চারদিকে অসংখ্য দুঃখ দুর্দশাগ্রস্থ, অবহেলিত ও নিপীড়িত মানুষ কোনও রূপে জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়, তাহলে সেই বঞ্চিত মানুষদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ, তাদের দুঃখে সান্ত্বনা দান এবং তাদের দুঃখ মোচনের প্রচেষ্টাই হলো আমাদের বিশেষ কর্তব্য।
৫ সেপ্টেম্বর, আমার জন্মদিন পালন না করে শিক্ষক দিবস উদযাপন করলেই আমি বেশি খুশি হব।
কলেজে ঢোকা এখন আরো সহজ হয়েছে, আর কঠিন হয়েছে শিক্ষিত হওয়া।
কিছু মূল্যবোধকে বিকশিত করতে হবে, যেমন – মনের ভয়কে দূরীভূত করা, চেতনাকে শক্তিশালী করা ইত্যাদি।
কেবল নিখুঁত মনের মানুষেরাই জীবনে আধ্যাত্মিকতার অর্থ বুঝতে পারেন। নিজের সত্যতা হল আধ্যাত্মিক একনিষ্ঠতার পরিচয়।
কোনো মানুষ স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারে না যদি না তার মধ্যে যুক্তিবাদ ও আধ্যাত্মিক বোধ জাগ্ৰত হয়৷
শ্রেষ্ঠ বই এবং শ্রেষ্ঠ মানুষের সান্নিধ্যে থেকে যে জীবন অতিবাহিত হয় সেই জীবনই উৎকৃষ্ট জীবন।
যতদিন আমাদের মেয়েরা উচ্ছল পুরুষদের খেলার পুতুল এবং পরিচারিকারূপে পরিগণিত হতে থাকবে ততদিন সমাজব্যবস্থায় দুর্নীতি থেকেই যাবে ।
শিক্ষকদের আচরণ হবে শিক্ষার্থীদের পক্ষে অনুকরণ যোগ্য। শিক্ষকরা যদি সঠিক পথ দেখায় তবে শিক্ষার্থীরাও সেই পথে চলতে শিখবে।
এমন শিক্ষার প্রয়োজন যা জগতের মানুষের কল্যাণ সাধনে সক্ষম। আমরা এমন শিক্ষা চাই যার সাহায্যে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করতে সক্ষম হয়।
মানুষের সঙ্গে মেলামেশার ক্ষেত্রে বয়স, জাতি, পদমর্যাদা ও শিক্ষা প্রভৃতির পার্থক্য বিচারের কোন মূল্যই আমার কাছে নেই।
আমরা যদি সুখে শান্তিতে থাকি, আর আমাদের চারদিকে অসংখ্য দুঃখ দুর্দশাগ্রস্থ, অবহেলিত ও নিপীড়িত মানুষ কোনও রূপে জীবন যাপন করতে বাধ্য হয়, তাহলে সেই বঞ্চিত মানুষদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ, তাদের দুঃখে সান্ত্বনা দান এবং তাদের দুঃখ মোচনের প্রচেষ্টাই হলো আমাদের বিশেষ কর্তব্য